আজ সোমবার, ২২শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

হকারদের ফাঁকি দিলেন শামীম ওসমান !

সংবাদচর্চা রিপোর্ট
আবারও ফুটপাত দখল করতে চাইছে হকাররা। গত কয়েকদিন ধরে তারা রাইফেল ক্লাবে যাতায়াত করছে। গতকাল বিকেলেও হকার নেতাদের দেখা গেছে রাইফেল ক্লাবে। এসময় অনেক হকার চাষাঢ়া শহীদ মিনার চত্বরে জড়ো হয়। তারা রাত ১০টা পর্যন্ত সেখানে ছিলো। রাতে কয়েকজন হকার নেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত ২ জুলাই তাদের সাথে মিটিংয়ের আশ্বাস দিয়েছেন শামীম ওসমান। এরপর প্রতিদিনই হকার নেতারা রাইফেল ক্লাবে গেলেও তিনি আসেননি। ধারণা করা হচ্ছে আগেরবারের মতো সাহস পাচ্ছেননা শামীম ওসমান ।
রাতে শহীদ মিনারে হকার নেতারা তাদের বক্তব্যে বলেন, এমপি শামীম ওসমান আমাদের সাথে দেখা করবেন বলেছেন। আমরা আজও তার জন্য অপেক্ষা করছি। রাত ১০টা পর্যন্ত থাকবো দেখি তিনি আসেন কি-না। এ সময়ে তারা বলেন, আমরা উচ্ছেদের শিকার হওয়ার পর থেকে কষ্টে আছি। পরিবার-পরিজন নিয়ে চলতে পারছিনা। এভাবে আমাদের দোকান বন্ধ করে দিলে আমরা কি করে খাবো।
সূত্র মতে, ২০১৭ সালের ২৫ ডিসেম্বর বড় দিন উপলক্ষ্যে শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে সাধু পৌলের গীর্জায় এসেছিলেন তৎকালিন নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার। এসময়ে গীর্জার সামনে হকার উচ্ছেদের জন্য সদর থানার তৎকালিন ওসিকে নির্দেশ তিনি তা মানেননি। ওইদিনই শহরে হকার উচ্ছেদ শুরু হয়। এরপর এর সাথে যোগ দেয় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে হকারদের পক্ষে যান শহরের বাইরের এমপি শামীম ওসমান। তিনি আল্টিমেটাম দিয়ে ১৬ জানুয়ারি হকারদের বসাতে যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হুকুম দেন। ওই দিন বিকেলে মেয়র আইভী নাগরিক সমাজের নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধু সড়ক দিয়ে চাষাঢ়ার দিকে হেঁটে আসছিলেন। সায়াম প্লাজার সামনে এলে তার উপর হামলা হয়। শামীম ওসমানের অনুগত নিয়াজুল মেয়রের দিকে পিস্তল উঁচিয়ে হামলা করে। পরে মেয়রের সাথে থাকা লোকজন নিয়াজুলকে মারধর করে। এ সময়ে আইভীর উপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে সন্ত্রাসীরা। মানবঢাল তৈরী করে আইভীকে রক্ষা করা হয়। এ নিয়ে শহর উত্তপ্ত হয়ে উঠে। বিষয়টি সরকারের উর্ধ্বতন মহলেও নাড়া দেয়।
এদিকে সম্প্রতি হকার উচ্ছেদে কড়া ভূমিকা রাখে পুলিশ। পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদের নির্দেশে শহরের সব সড়ক থেকে হকার উচ্ছেদ করা হয়। গত কয়েক দিন ধরে হকাররা আর ফুটপাতে বসতে পারেনা। তবে এ ক’দিন বসে নেই তারা। নিয়মিত রাইফেল ক্লাবে আসা যাওয়া করতে দেখা গেছে হকার নেতা রহিম মুন্সি, আসাদসহ কয়েকজনকে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রহিম মুন্সি রাইফেল ক্লাবে গিয়ে অন্য হকার নেতাদের মোবাইল ফোনে ডেকে আনে। হকাররা জানান, শামীম ওসমান তাদের আশ্বাস দিয়েছেন কিছু করার। তাই তার দেখা পেতে রাইফেল ক্লাবে আসেন তারা। প্রসঙ্গত, আওয়ামীলীগের এমপি শামীম ওসমান ঢাকায় থাকেন। তিনি নারায়ণগঞ্জে এসে দলীয় কার্যালয়ে না বসে রাইফেল ক্লাবেই বসেন। এখানে তার ব্যক্তিগত কোন অফিসও নেই। সূত্র মতে, পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ বর্তমানে দেশের বাইরে রয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে এই সুযোগে ফের হকার ইস্যু নিয়ে শহর অশান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।